যে পাঁচ ইসলামি ধারার ব্যাংক তারল্যঘাটতিতে পড়েছে। এই ব্যাংকগুলো আমানতের বিপরীতে প্রতিদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নগদ জমা (সিআরআর) রাখতে পারছে না। এর কারনে তাদের জরিমানা দিতে হচ্ছে। তবে গ্রাহকদের টাকা জমা ও উত্তোলনে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
ঘাটতিতে পড়া এই পাঁচ ব্যাংক হলো
- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ,
- সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল),
- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক,
- গ্লোবাল ইসলামী ও
- ইউনিয়ন ব্যাংক।
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক চলতি মাস থেকে এই ৫ ব্যাংকের উপর ১০ কোটি টাকার বেশি ঋণ বিতরণ ও আদায়ের তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করেছে, ইসলামী ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংককে খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক। এটি দেশে ইসলামি নীতির ব্যাংকগুলোর অন্যতম অর্থ জোগানদাতাও। তাই এটি তারল্যসংকটে পড়ায় অন্য ইসলামি ব্যাংকগুলোতেও প্রভাব পড়ছে। এই ব্যাংকগুলোকে প্রায় আট হাজার কোটি টাকা জমা ও ধার দিয়েছে ইসলামী ব্যাংক, যা ফেরত পাচ্ছে না। এতে দেশের বৃহত্তম ব্যাংকটির সংকট ধিরে ধিরে বারছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানান, এসব ব্যাংকগুলো নামে-বেনামে আগ্রাসী বিনিয়োগ করেছে, যা আদায় হচ্ছে না। এর ওপর অনেক আমানতকারী জমানো টাকা তুলে নিয়েছেন। এতে সংকট বেড়েছে।
সিআরআর ও এসএলআর (বিধিবদ্ধ জমা) হলো মুদ্রানীতির অন্যতম হাতিয়ার। এর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি ইনফ্লেশন নিয়ন্ত্রণের কাজ করে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো।
নিয়ম অনুযায়ী, ইসলামি নীতির ব্যাংকগুলোকে আমানতের সাড়ে ৪ শতাংশ সিআরআর ও ৫ শতাংশ এসএলআর হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে রাখতে হয়।
২০১৭ সালে মালিকানা পরিবর্তনের পর ইসলামী ব্যাংক ও এসআইবিএল থেকে নামে-বেনামে অনেক টাকা বের করে নিয়েছে একটি পক্ষ। অন্য তিনটি ব্যাংকের পরিস্থিতি আগে থেকেই এক রকম। মালিকানা পরিবর্তনের আগে ইসলামী ব্যাংকের বড় শাখা ছিল মতিঝিলের স্থানীয় শাখা। এখন সবচেয়ে বড় শাখা চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ। এটির ঋণ প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা, যা ২০১৭ সালে ছিল মাত্র ২ হাজার কোটি টাকা। নামে–বেনামে ঋণ নিতে ব্যাংকটির চট্টগ্রামের একাধিক শাখা, রাজধানীর বারিধারা, গুলশান-১ ও ২ শাখা, ফার্মগেট, ভিআইপি রোড, নবাবগঞ্জ ও পাবনা শাখাকেও বেছে নেওয়া হয়। এর সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের দেওয়া হয় একাধিক ‘বিশেষ পদোন্নতি’।
তথ্য অনুযায়ীঃ
ব্যাংক | বর্তমান ঘাটতি (৩১ অক্টোবর ২০২২ পর্যন্ত) |
ইসলামী ব্যাংক | ১ লাখ ৪০ হাজার ২২১ কোটি টাকা |
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক | ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা কম |
এস আই বি এল | ২০০ কোটি টাকা কম |
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক | আগে থেকে কম |
ইউনিয়ন ব্যাংক | আগে থেকে কম |
- গত সপ্তাহেও এই পাঁচ ব্যাংক চাহিদা অনুযায়ী সিআরআর রাখতে পারেনি। বৃহস্পতিবার ব্যাংকগুলোর ঘাটতি ছিলঃ ইসলামী ব্যাংকের ৫ হাজার ৫০ কোটি টাকা,
- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ১ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা,
- ইউনিয়ন ব্যাংকের ৫৪১ কোটি টাকা,
- সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৩০৫ কোটি টাকা ও
- গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ৮২ কোটি টাকা সিআরআর ।