চীনা ‘নজরদারি বেলুন’ আগামী কয়েক দিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে ভাসতে থাকবে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন। শুক্রবার মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগনের প্রেসসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট রাইডার সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তিনি বলেন, শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার ফুট উচ্চতায় কৌশলে চীনা বেলুনটি ভাসছিল। অ্যারোস্পেস ডিফেন্স সন্দেহভাজন নজরদারি বেলুনটিকে ‘নিবিড়ভাবে’ পর্যবেক্ষণ করছে বলেও জানান তিনি।
তিনি জানান, ‘বেলুনটি পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং মহাদেশীয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্র অতিক্রম করে গেছে। আমরা খতিয়ে দেখেছি, বেলুনটি এই সময়ে মাটিতে থাকা মানুষের জন্য কোনো সামরিক বা শারীরিক হুমকির কারণ হচ্ছে না।’ তবে আমরা পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা চালিয়ে যাব বলে জানান প্যাট। প্যাট বলেন, ‘বেলুনটিতে নজরদারি উপাদানের নিচে একটি বড় পেলোড দেখা গেছে, বেলুনের নিচের অংশে এটির অবস্থান।
যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে চীনা বেলুনটি শনাক্ত হওয়ার পর মার্কিন স্টেট সেক্রেটারি অ্যান্টনি ব্লিংকেন হঠাৎ তার বেইজিং সফর বাতিল করেছেন। এতে কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক বছরের মধ্যে এটিই হওয়ার কথা ছিল চীনে কোনো শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিকের প্রথম সফর।
এদিকে বেলুনটি চীনের বলে স্বীকার করেছে বেইজিং। তাদের দাবি, এয়ারশিপটি মূলত আবহাওয়া গবেষণার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ওয়েস্টারলি এবং সীমিত স্ব-স্টিয়ারিং সক্ষমতার’ কারণে বিমানটি ‘পরিকল্পিত গতিপথ থেকে অনেক দূরে সরে গেছে’। চীনা কতৃপক্ষ ‘মার্কিন আকাশসীমায় এয়ারশিপটির অনিচ্ছাকৃত প্রবেশের জন্য অনুতপ্ত’ বলেও উল্লেখ করেছে বেইজিং।
সন্দেহভাজন বেলুন বিষয়ে চীনের বিবৃতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রাইডার বলেন, ‘আমরা চীনের বিবৃতি সম্পর্কে খুব সচেতন, কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমরা জানি এটি একটি নজরদারি বেলুন। আমরা জানি, বেলুনটি মার্কিন আকাশসীমা এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে, যা অগ্রহণযোগ্য। এবং আমরা একাধিক স্তরে এটি সরাসরি চীনকে জানিয়েছি।’
চীনা ‘গুপ্তচর’ বেলুনে গুলি না করার কারণ হিসেবে পেন্টাগন প্রেস সেক্রেটারি বলেন, ‘বেলুনটি বর্তমানে বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের পথের অনেক ওপরে অবস্থান করছে। এ ছাড়া মাটিতে থাকা মানুষের জন্য এটি সামরিক বা শারীরিক হুমকি উপস্থাপন করছে না।’
এই মুহূর্তে গুলি না করার আরেকটি কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, ‘গুলি করে নামালে ধ্বংসাবশেষ মাটিতে থাকা মানুষের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে এবং এর ফলে নিচে থাকা সম্পদেরও ক্ষতি হতে পারে।’