নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী নাদিয়া আক্তারকে চাপা দেওয়া ভিক্টর পরিবহণের বাসচালক ও হেলপারকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে । ভাটারা থানার ওসি এবিএম আসাদুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, রাজধানীর মিরপুর থেকে সোমবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে বাসচালক লিটন এবং হেলপার আবুল খায়েরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ছাত্রীকে চাপা দেওয়া বাসটি জব্দ করা হয়েছে বলেও জানান ওসি। আটক চালক ও হেরপারকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
রোববার রাজধানীর প্রগতি সরণিতে বেপরোয়া বাসটি ছাত্রী নাদিয়া আক্তারকে বহনকারী মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।
মুহূর্তেই বাসের দুই চাকার মাঝামাঝি স্থানে ছিটকে পড়ে নাদিয়া। কিন্তু বাসটি না থামিয়ে তড়িঘড়ি করে ওই ছাত্রীর ওপর দিয়ে গাড়িটি চালিয়েই সটকে পড়ে বাসচালক। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এর পর হাসপাতালে নিলে সেখানে স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
ছাত্রীর বাবা মো. জাহাঙ্গীর কাজ করেন নারায়ণগঞ্জের একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে। তিন বোনের মধ্যে নাদিয়া ছিল সবার বড়। তাকে নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখতেন বাবা। নিমিষেই সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেয় ভিক্টর পরিবহণের বাস।
বাসযাত্রী হাসান মামুন জানান, মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন নাদিয়ার বন্ধু মেহেদী হাসান। পেছনে বসা ছিলেন নাদিয়া। ভিক্টর পরিবহণের বাসটি মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ছেলেটি পড়ে যায় ফুটপাতের দিকে আর মেয়েটি গাড়ির দিকে। মেয়েটির মাথা বাসের সামনের ও পেছনের চাকার মাঝামাঝি স্থানে পড়ে।
আমরা চালককে বাসটি থামাতে বলি। সে না থামিয়ে বেপরোয়া গতিতে টেনে যায়। এতে মেয়েটির মাথা পেছনের চাকার নিচে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই নিস্তেজ হয়ে যায় নাদিয়ার দেহ। পরে চালক গাড়ি থেকে নেমে পালিয়ে যায়। বাসটিকে জব্দ করে পুলিশ। নাদিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জাহিদুল ইসলাম বলেন, চালকের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। কারণ মোটরসাইকেলটি পড়ে যাওয়ার পর একজন চিৎকার করে বলছিল, ‘এই ড্রাইভার-দাঁড়ান, বাঁচবে বাঁচবে’। তখন তো চালকের টান দেওয়া উচিত হয়নি।
দাঁড়ালে অন্তত এটা বোঝা যেত যে, অনিচ্ছাকৃতভাবে ঘটনাটি ঘটেছে এবং সে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু মাথার ওপর দিয়ে বাসটি চালিয়ে নেওয়ায় অনেকটাই স্পষ্ট যে চালকের খামখেয়ালিতে মেয়েটি মারা যায়।