ডেঙ্গু! মৃত্যু ছয় গুণ বেড়েছে এক মাসের ব্যবধানে

dengue
Spread the love

ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার এক মাসে প্রায় ছয় গুণ বেড়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত জুন মাসে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৪৩ জন। চলতি জুলাই মাসে পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা হয়েছে ২০০ জন। গতকাল রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে ডেঙ্গুর জীবাণু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে দুই হাজার সাতশত একাত্তর জন, যা এক দিনে হাসপাতালে সর্বোচ্চ ভর্তি রেকর্ড। এর আগের রেকর্ড ছিল ২৬ জুলাই এক দিনে সর্বোচ্চ দুই হাজার পাঁচশত তেত্রিশ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। ওই দিন মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, নতুন রোগীর সংখ্যা চলতি মাসে ৪১ হাজার একশত ষাট জন। এর আগের জুন মাসে রোগীর সংখ্যা ছিল পাঁচ হাজার নয়শত ছয় জন। মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৬.৯১ শতাংশ। মৃত্যু হার বেড়েছে ৫.৮৮ শতাংশ।

গতকাল দুপুরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (এমআইএস) পরিচালক অধ্যাপক মো. শাহাদত হোসেন জানান, ১১ থেকে ৫০ বছর বয়সী মানুষ বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছেন। ঢাকা শহরে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার হার দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় বেশি। জুন মাসের তুলনায় এ মাসে রোগীর সংখ্যা প্রায় সাত গুণ বেড়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত এক দিনে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে এক হাজার পাঁচশত সত্তর জন ঢাকার বাইরের জেলায় ভর্তি হয়েছে, ঢাকায় ভর্তি হয়েছে এক হাজার একুশ জন।

বর্তমানে দেশের হাসপাতালে ভর্তি আছে ৯ হাজার ৪১৮ জন রোগী। তাদের মধ্যে ঢাকায় পাঁচ হাজার একশত সাতত্তর জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় চার হাজার দুশশত একাত্তর জন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেড়েছে চার হাজার নয়শত ত্রিশ জন। মৃত্যু হয়েছে ২৪৭ জনের।

আক্রান্ত শিশুদের হার ঢাকার মধ্যে ৭০ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে শূন্য থেকে ১৫ বছর বয়সীদের মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ১০ হাজার ৩৪৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ঢাকায় সাত হাজার এবং ঢাকার বাইরের তিন হাজার পাঁচশত আটজন। অর্থাৎ আক্রান্ত ৭০ শতাংশ শিশু ঢাকার।

পাঁচ হাজার শয্যা প্রস্তুত হচ্ছে।

ডেঙ্গু রোগীদের জন্য দেশের সরকারি হাসপাতালে প্রায় পাঁচ হাজার শয্যা প্রস্তুত রাখা হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান। গত শনিবার তিনি গণমাধ্যমকে তা জানান।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকায় প্রায় এক হাজার পাঁচশত শয্যা বাড়াতে বলেছি। ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালেও শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মোট পাঁচ হাজার শয্যা প্রস্তুত রাখতে বলেছি।’

বন্যা ও বৃষ্টির কারণে মশা বেড়েছে।

এ বছর বন্যা ও বৃষ্টি বেশি ছিল, যার কারণে মশা বেড়েছে। ডেঙ্গু রোগীদের সংখ্যা ও বেড়েছে। মশা নিধন করলে রোগীর সংখ্যাও কমে আসবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন। তিনি জনান, দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রস্তুতি আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *