বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেড অনুমোদন দিয়েছে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের তাদের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য। এ কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একটি কম্পানি যা দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান । আজ মঙ্গলবার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হওয়া কম্পানিটির ২৯তম বার্ষিক সাধারণ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরের কম্পানির পরিচালকমণ্ডলীর বিবরণী, নিরীক্ষিত আর্থিক হিসাব ও প্রতিবেদনগুলো অনুমোদন করা হয়। সেই সঙ্গে ১০ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়েছে।
শেয়ারহোল্ডাররা চলমান সংকট প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আলোচ্য বছরের নগদ লভ্যাংশ প্রদানের ঘোষণাকে কম্পানির সাফল্যের ইতিবাচক প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে সন্তোষ প্রকাশ করেন তাঁরা। কম্পানির ঊর্ধ্বতন উপদেষ্টা ও বিকল্প পরিচালক এ আর রশীদের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন নিরপেক্ষ পরিচালক খাজা আহমেদুর রহমান, পরিচালক মো. ইমরুল হাসান, মো. নাজমুল আলম ভূঁইয়া, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান (এফসিএ), চিফ অপারেটিং অফিসার মির্জা মুজাহিদুল ইসলাম, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসানসহ কম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিধিবদ্ধ নিরীক্ষকরা। এ সময় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শেয়ারহোল্ডার বার্ষিক সাধারণসভায় ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। সাধারণ সভাটি সঞ্চালনা করেন কম্পানি সচিব এম. মাজেদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানের সভাপতি এ আর রশীদ বলেন, ‘বর্তমানে কাগজ ও কাগজজাত পণ্যের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৮ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন। বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেড এ দেশের কাগজ ও কাগজজাত পণ্যনির্ভর খাতের প্রায় ৩০ শতাংশ মার্কেট শেয়ার তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্যেও ধরে রেখেছে। একই সঙ্গে দেশে বর্তমান টিস্যু পণ্যের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন, এ ক্ষেত্রে বসুন্ধরা পেপার মিলসের অবদান মোট চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশ। ‘ তিনি আরো বলেন, ‘মহামারি করোনাভাইরাসের ধকল বৈশ্বিক অর্থনীতিকে দ্বিগুণ মাত্রায় শ্লথ করেছে। এরই মধ্যে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে অর্থনৈতিক সংকট। যার বিরূপ প্রভাব দেশের অন্যান্য শিল্পের মতো কাগজশিল্পেও পড়েছে। তা সত্ত্বেও বিগত বছরের তুলনায় কর-পরবর্তী নিট মুনাফা ৯.৬৬ কোটি টাকা যোগ করে ২৩.৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ‘
এ আর রশীদ বলেন, ‘রপ্তানি আয় আগের বছরের তুলনায় ১৮৫.৩৮ কোটি টাকা যোগ করে প্রায় ১৮.৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে অত্র কম্পানি প্রায় এক কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করেছে আলোচ্য বছরে। এ বছর কম্পানির পণ্য ‘বসুন্ধরা টিস্যু’ পরপর চারবার ‘বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড’ খেতাব এবং মিডিয়া ক্যাটাগরির সবচেয়ে সৃজনশীল ব্যবহারের জন্য ‘বেস্ট কমিউনিকেশন অ্যাওয়ার্ড ২০২২’ অর্জন করেছে আলোচ্য বছরে। ‘
কম্পানির এই উপদেষ্টা ও বিকল্প পরিচালক আরো বলেন, ‘শেয়ারবাজারে নিবন্ধিত হওয়ার পর অর্থাৎ বিগত পাঁচ বছরে ৩,৬৭০ জন কর্মীবাহিনীর সমন্বয়ে পরিচালিত এই কম্পানি আলোচ্য বছরের ১৩০ কোটি ৯৬ লাখ টাকাসহ আয়কর, আবগারি শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক, নিয়ন্ত্রক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর বাবদ মোট ৪৪৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে পরিশোধ করে সরকারের মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল ২০৪১ বাস্তবায়নের অগ্রযাত্রায় শামিল হয়েছে। ‘
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সভায় প্রয়োজনীয় বিধি-বিধান সুষ্ঠুভাবে প্রতিপালন করায় নিরপেক্ষ মূল্যায়নকারী হিসেবে মাহাম্মদউল্লাহ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস, চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট অত্র কম্পানিকে প্রত্যয়নপত্র প্রদান করে।