বিমানে উঠতে দেওয়া হলো না ব্রাজিলের এক মডেল জুলিয়ানা নেহেমকে। সম্প্রতি কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে বৈরুত থেকে দোহা যাওয়ার জন্য এয়ারপোর্টে যান জুলিয়ানা। সেখানেই এ ঘটনা ঘটে।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে লেবাননে গিয়েছিলেন জুলিয়ানা। যাওয়ার সময় এয়ার ফ্রান্সে গিয়েছিলেন। কিন্তু ওই সময়ে কোনোরকম সমস্যা হয়নি তার। কিন্তু ২২ নভেম্বর যখন দোহা দিয়ে ব্রাজিলে যাচ্ছিলেন, ফেরার পথে তাকে বিমানে উঠতে দেওয়া হয়নি দোহা থেকে।
৩৮ বছর বয়সি মডেল জুলিয়ানা এ বিষয়ে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি জানান, তার অতিরিক্ত ওজনের কারণে তাকে বিমানে উঠতে দেওয়া হয়নি। বৈরুত থেকে দোহা যাওয়ার কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইট ছিল এটি। বিমানের একজন কর্মী তাকে বলেন, ফ্লাইটে উঠতে হলে তাকে ফার্স্টক্লাসের টিকিট কাটতে হবে। না হলে উঠতে পারবেন না। আর ফার্স্টক্লাসের টিকিটের মূল্য ৩ হাজার মার্কিন ডলার। ফার্স্টক্লাসের আসন আকারে বড়। যা তার সঙ্গে ফিট হবে। তা ছাড়া তিনি যে ১ হাজার ডলার দিয়ে টিকিট কেটেছেন, সে অর্থ ফেরত দেওয়া হবে না। এত বড় কোম্পানির বৈষম্যমূলক এমন আচরণ খুবই লজ্জাজনক। উনি মোটা কিন্তু অন্য সবার মতো স্বাভাবিকই।
এ পরিস্থিতিতে জুলিয়ানা যোগাযোগ করেন ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এবং কোনো বাড়তি অর্থ না দিয়ে অন্য একটি ফ্লাইটে পরিবারসহ ব্রাজিলে ফেরেন তিনি। জুলিয়ানা ব্রাজিলে ফিরে আদালতে মামলা করেন। গত ২০ ডিসেম্বর এ মামলার রায় দিয়েছেন আদালত।
বিচারক রেনাটা মার্টিনস বলেন, ‘মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জুলিয়ানা। এজন্য ১ বছর ধরে সপ্তাহে সেশনপিছু ৭৮ ডলার ব্যয়ের থেরাপি প্রয়োজন। এই চিকিৎসা বাবদ কাতার এয়ারওয়েজ মোট ৩ হাজার ৭১৮ মার্কিন ডলার জুলিয়ানার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
আদালতের এই রায়ের পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যান জুলিয়ানা। তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে আমি তাদের কাছে মানুষ ছিলাম না। আমি একটি মোটা দানব এর মত ছিলাম, যে আমাকে তারা প্লেনে উঠতে দেইনি। এটা আমার জন্য খুবই বাজে অভিজ্ঞতা ছিল। এমন কিছুর মধ্য দিয়ে যাওয়ার কথা কখনো আমি কল্পনাও করিনি।’
অভিযোগটি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে কাতার এয়ারওয়েজ। সংস্থাটির দাবি, জুলিয়ানার এক সঙ্গী কোভিড বিধি ঠিকমতো মানছিলেন না। সে কথা তাকে বলতেই জুলিয়ানা সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে ভালভাবে কথা বলছিলেন না। সেই কারণেই তাকে প্লেনে উঠতে দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছে কাতার এয়ারওয়েজ।