দেশে প্রথমবারের মতো ‘শুমারি ও গৃহস্থালি শুমারি-২০২২’ প্রকল্পের আওতায় তিন লাখ ৯৫ হাজার ট্যাব কিনেছে সরকার। এতে ব্যয় হয় ৪৪৭ কোটি ৭৭ লাখ ৭৭ হাজার ৬৭০ টাকা। এসব ট্যাব প্রায় আট মাস ধরে পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) কাছে পড়ে আছে। এখন মাধ্যমিক ও সমমানের শিক্ষার্থীদের উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে প্রায় দুই লাখ ট্যাব পাওয়া যাচ্ছে।
বিবিএস গত বছরের মে মাসের শেষের দিকে গৃহস্থ আদমশুমারি ও আদমশুমারি প্রকল্পের আওতায় ট্যাবগুলো কিনেছিল। এরপর ১৫ জুন শুমারির কাজ শুরু হয়। ২১ জুন শেষ হবে। এখন এই ট্যাবগুলো ঢাকার আগারগাঁওয়ের পরিসংখ্যান ভবনে পড়ে আছে। বিবিএস জানায়, মোটা অংকের টাকায় কেনা এই ট্যাবগুলো ব্যবহারের উপায় খুঁজছে বিবিএস। তবে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে মাধ্যমিক ও সমমানের শিক্ষার্থীদের ট্যাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিবিএস বলছে আধুনিক মানের ট্যাবে যা থাকা উচিত সবই এই ট্যাবে আছে। ট্যাব কনফিগারেশন উচ্চ মানের. এতে ৩২ জিবি র্যাম রয়েছে। শিক্ষার্থীরা টাইপিং, ডকুমেন্টেশন, প্রেজেন্টেশন তৈরি করতে এই ট্যাবটি ব্যবহার করতে পারে, যা তাদের শেখার পরিবেশকে আরও অনুকূল করে তুলবে। তবে কোন জেলার শিক্ষার্থীদের মাঝে এসব ট্যাব বিতরণ করা হবে তা এখনো নির্ধারণ করেনি বিবিএস।
আদমশুমারী ও গৃহ গণনা প্রকল্পের পরিচালক দিলদার হোসেন বলেন, “যে উদ্দেশ্যে আমরা ট্যাবগুলো কিনেছিলাম তা সম্পূর্ণ সফল হয়েছে। আমরা খুব দ্রুত সময়ে আদমশুমারির ফলাফল প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছি। এখন আমরা এই ট্যাবগুলো ব্যবহার করতে চাই। পরবর্তী সমীক্ষা। এছাড়া আমরা শীঘ্রই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে উপহার হিসেবে মাধ্যমিক ও সমমানের শিক্ষার্থীদের হাতে প্রায় দুই লাখ ট্যাব তুলে দেব। ট্যাবগুলো রাষ্ট্রীয় সম্পদ। আমরা চাই না সেগুলো নষ্ট হোক। একটি নির্দেশিকা দেওয়া হচ্ছে। ট্যাব বিতরণের জন্য আঁকা।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির অধ্যাপক বিএম মইনুল হোসেন মনে করেন, বিবিএস-এর উচিত ট্যাবের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা। কারণ এসব ট্যাব দীর্ঘদিন ভালো পরিবেশে না রাখলে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।
বিবিএস অর্থনৈতিক শুমারি-২০২৩ পরিচালনার জন্য ১ লাখ ৪০ হাজার ট্যাব দাবি করেছে। তবে বিবিএসের একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, চলতি বছরের মধ্যে অর্থনৈতিক শুমারি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ফলে এ বছর এ প্রকল্পে ট্যাব ব্যবহারের কোনো সম্ভাবনা নেই। এর বাইরে বিবিএসের বিভিন্ন শাখা থেকে ১৭ হাজার ৮১৮টি ট্যাবের চাহিদা এসেছে। বিবিএসের মাঠপর্যায় থেকে ৩ হাজার ৫১৭টি ট্যাবের চাহিদা এসেছে। অন্যদিকে, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তরের দ্বিতীয় ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ব্যবহারের জন্য বিবিএস আরও ২৫০টি চাহিদাপত্র পেয়েছে। সব মিলিয়ে ১ লাখ ৬১ হাজার ৫৮৫টি ট্যাবের জন্য আবেদন এসেছে। এসব দাবি শুধু বিবিএস ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে এসেছে।