অসুস্থতার কারণে কখন রোজা না রাখা জায়েজ

Sick-ramadan-rules-collected
Spread the love

অসুস্থ ব্যক্তি দুই ধরনের। এক. খুবই অসুস্হ। রোজা রাখার সামর্থ্য নেই, ভবিষ্যতেও সুস্থতা লাভের আশা নেই। সে শায়খে ফানি (অতিশয় বৃদ্ধ, যার রোজা রাখার শক্তি নেই) এর ন্যায় রোজা রাখবে না বরং প্রত্যেক রোজার পরিবর্তে একটি করে ফিদয়া দেবে।

তবে পরবর্তী সময়ে কল্পনাতীতভাবে সুস্থতা লাভ করলে রোজাগুলোর কাজা আদায় করতে হবে। পূর্বের দেওয়া ফিদয়াগুলো যথেষ্ট হবে না। অবশ্য এগুলো সাধারণ দানের অন্তর্ভুক্ত হবে। এবং দানের সওয়াব পাবে।

দুই. খুবই অসুস্থ। রোজা রাখার সামর্থ্য নেই, রোজা রাখলে অসুস্থতা বৃদ্ধি পাবে। তবে ভবিষ্যতে আরোগ্য লাভের আাশা আছে। সে রোজা রাখবে না এবং ফিদয়াও দেবে না।

বরং আরোগ্য লাভ পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। আরোগ্য হলে রোজাগুলোর কাজা করবে। অবশ্য অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে তার ওপর কাজা-ফিদয়ার অসিয়ত কোনোটাই ওয়াজিব হবে না। তা সত্ত্বেও অসিয়ত করলে অসিয়ত সহিহ হয়ে যাবে। এবং কাফন-দাফন ও ঋণ পরিশোধ করার পর অবশিষ্ট এক-তৃতীয়াংশ সম্পত্তি থেকে অসিয়ত আদায় করা হবে।

সুস্থতা লাভের পর রোজাগুলো কাজা করার সময় পাওয়া সত্ত্বেও কাজা না করে মারা গেলে মৃত্যুর আগে তার ওপর ফিদয়ার অসিয়ত করা ওয়াজিব হবে। অসিয়ত করে গেলে ওয়ারিসরা তার ত্যাজ্য সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ থেকে ফিদয়া আদায় করে দেবে। তারা রাজি থাকলে পূর্ণ সম্পত্তি থেকেও আদায় করতে পারবে। এমনিভাবে কোনো ওয়ারিস না থাকলে পূর্ণ সম্পত্তি থেকে অসিয়ত আদায় করা হবে।

ফিদয়ার পরিমাণ এক-তৃতীয়াংশ সম্পত্তির চেয়ে বেশি হলে বেশিটা আদায় করা ওয়ারিসদের উপর ওয়াজিব নয়। তবে সকল ওয়ারিস রাজি থাকলে এবং তাদের মধ্যে কেউ নাবালেগ না থাকলে তারা নিজেদের সম্পত্তি থেকে বেশিটার ফিদয়া আদায় করতে পারবে। আর নাবালেগ থাকলে তার অংশ আলাদা রেখে বালেগ ওয়ারিসরা নিজেদের অংশ থেকে বেশিটার ফিদয়া আদায় করতে পারবে।

আর অসিয়ত না করে থাকলে ওয়ারিসদের ওপর ফিদয়া আদায় করা ওয়াজিব নয়। তা সত্ত্বেও স্বতঃস্ফূর্তভাবে তারা নিজেদের সম্পত্তি থেকে আদায় করে দিলে আশা করা যায় আল্লাহতায়ালা তা কবুল করবেন। এবং মাইয়্যেত রোজা না রাখার গুনাহ থেকে মুক্তি লাভ করবেন।

ফাতাওয়া শামি ৩/৪০৬-৪১০,ফাতাওয়া আলমগিরি ১/২০৭,মাহমুদিয়া ১৫/২২০।

রোজার ফিদয়া

প্রতি রোজার পরিবর্তে সকাল-সন্ধ্যা একজন মিসকিনকে পেটা ভরে খানা খাওয়ানো। অথবা সদকায়ে ফিতির বরাবর আটা বা গম বা চাল ইত্যাদি দেওয়া অথবা তার সমপরিমাণ মূল্য দেওয়া। (ফাতাওয়া শামি ৩/৪১০,ফাতাওয়া আলামগিরি ১/২০৭)

এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর নিকট এসে বলল, আমি রোজা অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করেছি। রাসুল (সা.) তাকে কাফফারা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং: ৬৭০৯; তিরমিজি, হাদিস নং: ৭২৪)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *