চাকরি স্থায়ী না হলে কেউ বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন কিংবা প্রশিক্ষণের জন্য যেতে পারবেন না। মাস্টার্স কোর্স অধ্যয়নের জন্য একজন কর্মকর্তা একবারের বেশি বিদেশ গমনের আবেদন করতে পারবেন না। এছাড়া কোনো কর্মকর্তা পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের পর দেশে ফিরে মাস্টার্স অথবা ডিপ্লোমা কোর্স অধ্যয়নের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। তবে পোস্ট ডক্টোরাল কোর্সের আবেদনে কোনো বাধা নেই। বিদেশ প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষা নীতিমালায় এসব বিধানসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে সংশোধনীর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি খসড়া প্রায় চূড়ান্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
বর্তমানে চাকরিতে যোগদান করেই কর্তাব্যক্তিদের বিশেষ আশীর্বাদে অনেকে উচ্চতর ডিগ্র কিংবা বৃত্তির জন্য বিদেশে পাড়ি দিচ্ছেন। উল্লিখিত বিধান কার্যকর হলে সেই সুযোগ আর থাকবে না। বুনিয়াদি ও বিভাগীয় প্রশিক্ষণ শেষে চাকরি স্থায়ী হলেই কেবল তিনি বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রি কিংবা প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। বিদ্যমান নীতিমালায় শুধু প্রশিক্ষণ শেষে বিদেশে উচ্চ ডিগ্রির জন্য যাওয়ার কথা বলা আছে।
১৯৯২ সালের নীতিমালা বেশ পুরোনো। সে কারণে যুগোপযোগী করার জন্য সংশোধন করা হচ্ছে। এছাড়া কিছু বিষয় আছে যেগুলো নির্দিষ্ট করা নেই। সেগুলো নির্দিষ্ট করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, উচ্চ ডিগ্রি অর্জন শেষে চাকরি ছাড়লে টাকা ফেরত দেওয়ার বিধান নীতিমালায় আগেও ছিল। তবে খুব একটা কড়াকড়ি ছিল না। এখন আমরা একটু কঠোর অবস্থানে যাচ্ছি। এখন কেউ চাকরি ছাড়লে উচ্চ ডিগ্রি অর্জনের সময় ব্যয়িত সব টাকা ফেরত দিতে হবে।
নীতিমালার খসড়া অনুযায়ী, ওরিয়েনটেশন কোর্স, স্টাডি ট্যুর এবং আট সপ্তাহের কম মেয়াদি বৃত্তির ক্ষেত্রে অবসরের কাছাকাছি কর্মকর্তাদের পাঠাতে হবে। এ ধরনের বৃত্তির ক্ষেত্রে আগে ৫৬ বছর বয়সিদের প্রাধান্য দেওয়া হতো। এখন থেকে ৫৮ বছর বয়সিরা প্রাধান্য পাবেন। ছয় মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের ক্ষেত্রে আগে বিদেশ যেতে বয়সসীমা ছিল ৫২ বছর। নতুন নীতিমালায় তা হবে ৫৪ বছর। ছয় মাসের বেশি সময় চলা প্রশিক্ষণ কোর্স মধ্যমেয়াদি এবং আগে এ ধরনের কোর্সে ৪৫ বছর বয়সি কর্মকর্তারা যেতেন। এখন থেকে ৪৮ বছরের নিচে কেউ যেতে পারবেন না। তবে দীর্ঘ মেয়াদে চলা কোনো কোর্সে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ বাড়ানো হচ্ছে। আগে দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে যাওয়ার বসয় ছিল সর্বনিম্ন চল্লিশ বছর। এখন থেকে তা হবে ৪৫ বছর। এর আওতায় তারা এমএস, পিএইচডি, পোস্ট ডক্টোরাল রিসার্স কোর্সে অংশ নিতে পারবেন। তবে বৃত্তি প্রদানকারী দেশ কিংবা সংস্থা যদি প্রার্থীর বয়সসীমা শিথিল করে তা হলে উল্লিখিত শর্ত প্রযোজ্য হবে না।
খসড়ায় বলা হয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের পরিবর্তে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে গমন করা কর্মকর্তা ও শিক্ষার অগ্রগতি তদারকি করবে। বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্য যাওয়া কর্মকর্তার মুচলেকায় জামিনদারের বিদ্যমান শর্ত তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করা হচ্ছে। বিদ্যমান বিধিমালা থেকে বাংলাদেশের বিমানবন্দরে বেসামরিক কর্মকর্তাদের জন্য ভ্রমণ ও আরোহিত ফি ছাড়া অন্যান্য ফি আদায় করার যে শর্ত রয়েছে তা তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়ায়।