লাইলাতুল মিসক্ব মিনা’শ শাবান

Lailatul-mishk-min-shaban-collected
Spread the love

শবে বরাত উপলক্ষে সাওম রাখা, সালাত আদায় করা বিদাত।তবে এ রাতে আল্লাহ তার গুনাহগার বান্দাদের মাফ করেন যারা শির্ক এবং বিদ্বেষ পোষন করে না। সুতরাং এ রাতে বিদাতি আমল পরিহার করে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দুয়া,জিকির এস্তেগফার করতে পারেন

এই রাতটিকে হাদিসের ভাষায় বলা হয় লাইলাতুল মিসক্ব মিনা’শ শাবান। আশা করি, আর কোনো কনফিউশান থাকবে না।

শবে বরাতের রাতটি কি বিশেষ কিছু? এটি কি সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত?জ্বী, এই রাতটি বিশেষ কিছুই। শবে বরাত সম্পর্কে একটি মাত্র সহীহ হাদীস এসেছে।

রাসূল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা মধ্য শাবান (১৪ তারিখ দিবাগত রাত, অর্থাৎ শবে বরাত) এর রাতে তাঁর সৃষ্টির প্রতি (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষনকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন।’ (সহীহ ইবনে হিব্বান ১২/৪৮১)

[বিঃদ্রঃ কেউ সারারাত ঘুমিয়ে থাকলেও আল্লাহর এই সাধারণ ক্ষমা থেকে বঞ্চিত হবে না। তবে শর্ত দুটোঃ শির্কের সাথে সম্পৃক্ত থাকা যাবে না এবং কোনো মুসলিমের প্রতি বিদ্বেষ রাখা যাবে না। (শায়খ ড. আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহ.)]

এই রাতের কি বিশেষ কোনো আমল আছে?

না, সহীহ সনদে এই রাতের কোনো বিশেষ আমল নেই। তবে একাধিক দ্ব’ঈফ হাদীসে এসেছে, নফল সালাত, দু’আ ও কবর যিয়ারত করা।

মা’আরিফুল কুরআনের লেখক মুফতী শফী রহ. বলেন, রাসূল সা. যেহেতু জীবনে মাত্র একবার এই রাতে বাকী গোরস্তানে গিয়েছেন তাই আমাদেরও একবারের অধিক, প্রতিবছর গোরস্তানে যাওয়া উচিত নয়।

[ইবনু তাইমিয়াহ রাহ.সহ অনেক আলিম বলেছেন, এই রাতে ইবাদত হবে একাকী, সম্মিলিত নয়। সম্মিলিত ইবাদতের কথা কোনো হাদীসেই আসেনি। বরং এটি একটি বাজে প্রথা, যা বিদ’আতের পথ প্রশস্ত করে।]

শবে বরাতের কোনো রোযা আছে?

অত্যন্ত দুর্বল একটি হাদীসে এসেছে রোযার কথা। এজন্য এই রাতে রোযা রাখা রাখা সুন্নাত নয়। শবে বরাতের কোনো রোযা নেই।

তবে যেহেতু রাসূল সা. শাবান মাসে খুব বেশি পরিমাণে সিয়াম (রোযা) রাখতেন সেহেতু এই মাসে সিয়াম রাখা যাবে যেকোনো দিন।

আর প্রতি চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ সিয়াম রাখা তো সুন্নাত। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে সিয়াম রাখলে, কোনো সমস্যা নেই। তাই যারা সিয়াম রাখতে চান তাঁরা ঐ তিনটি সিয়াম রাখুন। কিন্তু এই নিয়ত রাখা যাবে না যে, এটি শবে বরাতের রোযা। (মুফতী তাকী উসমানী সাহেবের লেখা অবলম্বনে)

এই রাত কি ভাগ্যরজনী?

না, এই রাত ভাগ্যরজনী নয়। ভাগ্যরজনী হলো, লাইলাতুল কদর। প্রয়োজনে দেখুনঃ সূরা আল কদরের তাফসীর, যেকোনো তাফসীরগ্রন্থ থেকে।

[শব্দটি মূলত “বরাত” না, “বারাআত”। বারাআত মানে মুক্তি। যেহেতু এই রাতে মুক্তির সুসংবাদ এসেছে তাই এই নাম]

এই রাতে কি হালুয়া-রুটি করা ভালো?

না, কক্ষণো নয়। বরং এটি একটি নিকৃষ্ট প্রথা, যা আমাদের সমাজে চালু হয়েছে। তেমনি হৈ-হুল্লোড় করা, আতশবাজি ফুটানো, মাসজিদে জমায়েত হওয়া — এগুলো খুবই বাজে প্রথা। যা কোনো হাদীসেই নেই।

এই রাতে গোসলের কোনো ফযিলত আছে?

না, এটি একটি বাজে প্রথা। কেউ সুন্নাত মনে করে এই রাতে গোসল করলে সেটি হবে বিদ’আত (ধর্মে নবআবিষ্কার)।

( মুফতি তাকী উসমানী, মুফতি আবদুল মালেক, শায়খ ড. আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর, শায়খ আবদুল কাইয়ুম, শায়খ মাহবুব আরিফি– প্রমূখ আলেমদের লিখনী ও লেকচার থেকে সংক্ষেপে লিখিত )

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *